মোঃ মাহমুদুল হাসান কবির, বরগুনা প্রতিনিধি
বরগুনার পাথরঘাটায় জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন শেষে শ্বশুর বাড়ি ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের হামলায় যুবদল নেতা নাসির হাওলাদার (৩৮)কে হত্যা করা হয়েছে। জানা গেছে, ছাত্রলীগের নামধারী দুর্বৃত্তরা নাসিরের পায়ের রগ কেটে এবং এলোপাথাড়ি কুপিয়ে তাকে হত্যা করে। হত্যার বিচারের দাবিতে আজ রাত ৮টার দিকে পাথরঘাটা শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভা করেছে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
আজ বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫) দুপুরে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক নাসিরকে মৃত ঘোষণা করেন। এর আগে, দুপুর ১:৩০ টার দিকে কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সত্তার মেলেটারির বাড়ির সামনে নাসিরকে কুপিয়ে পায়ের রগ বিচ্ছিন্ন করে ফেলে রেখে যায় হামলাকারীরা। খবর পেয়ে বরগুনা পুলিশ সুপার ইব্রাহিম খলিল ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আবু ছালেহ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মেহেদী হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
নাসির হাওলাদার পাথরঘাটা পৌর এলাকার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের শাহজাহান হাওলাদারের ছেলে এবং যুবদলের সদস্য ছিলেন।
হামলাকারীরা ছাত্রলীগের নামধারী বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা হলেন, রাব্বি (মাহবুব হোসেনের ছেলে) এবং হাসান (ফরিদ গাজীর ছেলে), যারা কালমেঘা ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। এলাকাবাসী জানায়, তারা আগে ছাত্রলীগের ক্যাডার বাহিনী হিসেবে পরিচিত ছিল।
পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শাহাদাত হোসেন জানান, নাসিরকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তার দুই পায়ের রগ কাটা ছিল এবং অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে তার মৃত্যু হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী আনসার মোল্লা জানান, দুপুরে বাড়ির সামনে চিৎকার শুনে তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং দেখেন নাসির রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছেন। এ সময় রাব্বি ও হাসানকে মোটরসাইকেলে পালাতে দেখা যায়, এবং রাব্বির হাতে একটি রামদা ছিল।
পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক চৌধুরী মোহাম্মদ ফারুক বলেন, “নাসির যুবদলের একজন সক্রিয় কর্মী ছিলেন। দলীয় প্রোগ্রাম শেষে শ্বশুর বাড়ি যাওয়ার পথে তাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হামলাকারীরা আগে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিল।”
বরগুনা পুলিশ সুপার ইব্রাহিম খলিল জানিয়েছেন, সিগারেট খাওয়া নিয়ে নাসির ও হাসানের মধ্যে বিরোধ ছিল। বিষয়টি বুধবার স্থানীয় সালিশ বৈঠকে সমাধান করা হয়েছিল, তবে হাসান সন্তুষ্ট না হওয়ায় রাব্বি ও তার সহযোগীরা নাসিরকে হত্যা করে। ইতিমধ্যে রাব্বির বাবা মাহবুবকে পুলিশ আটক করেছে এবং বাকিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান চলছে।